এম এ মান্নান :
ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার সাবেক ইউএনও ফুলপুরের সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফরিদা ইয়াসমিন একজন পুত্রবধূ হিসেবে তার মরহুম শ্বশুর জওহর আলীর জন্যে ফেইসবুকে এক মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস দিয়েছেন। উহা নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো:
আমার শশুর গত চার বছর ধরে টাংগাইলে গ্রামের বাড়ীতে থাকছিলেন। নভেম্বরে অসুস্থ হলে আমরা উনাকে ময়মনসিংহে নিয়ে আসি। মার্চ পর্যন্ত বাসার নিচে যেতেন । ভালই ছিলেন মোটামুটি । করোনার দাপট শুরু হবার পর সকাল বিকাল কেবল ছাদে যেতে পারতেন। কিন্তু এব্যবস্থাও উনার মনঃপূত হতোনা। ক্রমেই মন খারাপ রাগে পর্যবসিত হলো। শুধু বলতেন টাংগাইল যাবেন। গাড়ি পাওয়া না গেলে রিক্সায় ভেংগে ভেংগে যাবেন । একথা শুনে আমার আব্বা বলতেন ” বেয়াই রিক্সাত গেলে আমনের বিশ হাজার টাকা লাগবো ” ! দুই বৃদ্ধ লোকের কথা শুনতাম আর হাসতাম। ঈদ যাওয়ার পর আমার শশুর টাংগাইল যাবার জন্য আরও ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। ভাবলাম মের পর পরিস্থিতি হয়ত ভাল হবে! সেটা আর হলো না। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে সকাল বেলা বিছানা থেকে পড়ে গেলেন । প্রথমে আমরা বুঝিনি । অতি কষ্টে ডাক্তার দেখানোর পর জানা গেল উনি স্ট্রোক করেছেন । কেন জানি ভেতরটা কেমন করে উঠলো। উনার শেষ ইচ্ছেটুকুর মান্যতা দিতে চাইলাম আমরা। গ্রামে নিয়ে যাওয়া হলো। শেষ সময়টা আমার কাছে থাকা হলোনা। ৩০ শে জুন চলে গেলেন । আজ দশ দিন হয়ে গেল । খাবার টেবিলে বসতে পারিনা। বারান্দায় দাঁড়াতে পারিনা। সারা বাসায় ফিরে ফিরে হাহাকার বাজতে থাকে ।
শ্বশুড়ের জন্যে একজন পুত্র বধূর মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস
