এম এ মান্নান :
ফুলপুর থেকে ফেরত গেছে বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের প্রায় ৪ কোটি টাকা। এতে উন্নয়নবঞ্চিত হয়েছে ময়মনসিংহের ফুলপুরবাসী। উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়হীনতার অভাবে সময়মত প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফেরত গেছে এডিপি, টিআর, কাবিখা ও কর্মসৃজন প্রকল্পের প্রায় ৪ কোটি টাকা। এর ফলে চার কোটি টাকার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হলো ফুলপুরবাসী।
জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের বয়স্কভাতার কার্ড বিতরণ নিয়ে গত ২০ জানুয়ারি উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থক কয়েক যুবকের হাতে লাঞ্চিত হন ইউপি চেয়ারম্যান আবু ছাঈদ সরকার। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেলকে দায়ী করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। এ নিয়ে থানায় মামলাও হয়েছে। এরপর গত ২৯ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। তারপর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে ইউপি চেয়ারম্যানদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সমন্বয় সভাসহ সব মিটিং তারা বয়কট করতে থাকেন। এর ফলে সময়মত প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নসহ স্বাভাবিক কাজকর্মে অচলাবস্থা দেখা দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের ৫ মাসের দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়হীনতায় প্রকল্প অনুমোদন ও ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বরাদ্দের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) ৯৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ১ম ও ২য় পর্যায়ের সোলার প্রকল্পের ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪৮ টাকা, কাবিখা ২য় পর্যায়ের গম ১০ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৯ টাকা, টেস্ট রিলিফ (টিআর) ১ম ও ২য় পর্যায়ের সোলার প্রকল্পের ৫০ লাখ ১৫ হাজার ৬১৪ টাকা, টিআর ২য় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্পের ২৯ লাখ ৯ হাজার ৭১০ টাকা এবং অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচির ১৬ দিনের ১ কোটি ৩৯ লাখ ১০ হাজার ৪০০ টাকা ফেরত যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ছাইদ সরকার বলেন, আমি টিআর কাবিখার ১ম ও ২য় পর্যায়ের কাজ করেছি কিন্তু বিল পাইনি। উপজেলা চেয়ারম্যান কিভাবে প্রকল্পের টাকা লেপস করেছে, তা আমরা জানি না। ভাইটকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন বলেন, সমন্বয়হীনতার অভাবে এগুলো ফেরত গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম টাকা ফেরত যাওয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল বলেন, দুই কারণে এসব টাকা ফেরত গেছে। এক. রাজনৈতিক কারণ ও দুই. কাজ না করে বিল উত্তোলন করতে চাওয়ার কারণে। ফুলপুর উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, আমি যোগদানের পর উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব মীমাংসা করে অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়েছি। শীঘ্রই সবাইকে নিয়ে বসা হবে।