এম এ মান্নান:
ময়মনসিংহের ফুলপুরে পানির চেয়েও কম দরে বিক্রি হয়েছে কুরবানির চামড়া। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার গরিব-মিসকিন ও এতিমরা। বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে। আধা লিটার পানির দাম ১৫ টাকা। অথচ ফুলপুরে একটি খাশির চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০ টাকায়।
এ বছর ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু গ্রামের লোকেরা এ হিসাব বুঝতে না পারায় ঠকেছেন তারা। এছাড়া প্রতারক ব্যবসায়ীরাও ওই আইন না মেনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্রাম্য লোকদের বোকা বানিয়ে ঠকিয়ে একেবারে কম দামে তারা চামড়া কিনেছেন।
যে চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা সেই চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে মাত্র ৫ থেকে ৭শ টাকায়। সর্বনি¤œ ৫০ টাকায়ও গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ফুলপুরে। আমুয়াকান্দা গ্রামের মাহফুজ বলেন, আমরা ৬৫হাজার টাকায় একটা গরু কুরবানী করে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়ি। অবশেষে সন্ধ্যায় মাত্র ৫০ টাকায় যাইস্যা বিক্রি করতে হয়েছে। ঈদের রাতে ফুলপুর বাসস্ট্যান্ডে চামড়ার হাট পরিদর্শন করতে গিয়ে কথা হয় চামড়া ব্যবসায়ী সুমন মিয়ার সাথে। তিনি জানান, খাশির চামড়া ১০ থেকে ৩০ টাকায় কিনা হচ্ছে। আর গরুর চামড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৩’শ টাকায় কিনতাছি।
উপজেলার পারতলা গ্রামের আবুল কাসেমকে ৪টি গরুর চামড়া নিয়ে আমুয়াকান্দা ব্রিজের গোড়ায় অসহায়ের মত বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি জানান, ২ ঘন্টা ধরে বসে আছি। আমার ৪টা চামড়া ৫’শ টেহার উপরে কেউই দাম কয় না। চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৫’শ টেহার উপরে অহনও কোন চামড়া কিনছি না।
হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল গ্রামের মোশাররফ হোসেন রিপন বলেন, আমরা ৫ জনে একটা গরু কুরবানী দিছি। চামড়া বিক্রি করে ভাগে পাইছি মাত্র ১০০ টাকা। অন্তত: ১০টা মাদ্রাসা থেকে চামড়ার টাকা চাইয়া গেছে। আর আশপাশের গরিবরা তো আছেই। অহন কারে কইথ্যে দিব, বলেন? আমুযাকান্দা গ্রামের মোতালেব চামড়ার দর পতনের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চামড়ার দর পতনের কারণে মাদ্রাসার এতিম অনাথ ও নিঃস্ব গরিবরা বঞ্চিত হবে। বিষয়টি বিবেচনার জন্য তিনি সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ প্রসঙ্গে গোদারিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, চামড়া বিক্রির টাকা মূলত গরিব, এতিম ও দুস্থদের হক। কাজেই চামড়ার দাম কমে যাওয়া মানেই গরিব ও এতিমদের অংশ কমে যাওয়া। এ বিষয়ে সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ফুলপুরে পানির চেয়েও কম দরে বিক্রি হয়েছে কুরবানির চামড়া
