এম এ মান্নান
বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ কৃতিত্ব ও অবদান রাখায় ফুলপুর অনার্স স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ফুলপুরের কৃতি সন্তানদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে ফুলপুরে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন, সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ফুলপুরের কৃতি সন্তান ফুলপুর অনার্স স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা আকবর আলী আহসান। এবার ২০১৮ সনে শুধু ফুলপুর থেকেই দেশের সনামধন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ৮ কৃতি শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, এভাবে প্রতি বছর ছাত্ররা চান্স পেলে ৫ বছরেই ফুলপুরে ডাক্তার হয়ে যাবে ৪০ জন। এ সময় শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে ফুলপুরকে একটি আদর্শ উপজেলা হিসেবে গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আকবর আলী আহসান বলেন, ফুলপুরে ডাক্তারদের শুধু চেম্বার হলেই চলবে না বরং একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সময় করতালির মাধ্যমে সবাই তাকে সমর্থন করেন । অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বৃহত্তর ফুলপুরের কৃতি সন্তান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ গণপতি আদিত্য বলেন, ফুলপুরে তাঁর একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করার প্রবল ইচ্ছে রয়েছে ।
১৩ অক্টোবর ২০১৮ শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের মুসলিম ইনস্টিটিউটে ফুলপুর অনার্স স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত ফুলপুরের গুণীজন ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফুলপুর-তারাকান্দার প্রিয় মুখ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঐতিহ্যবাহী সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফুলপুরের তারকা ডাক্তার সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব গণপতি আদিত্য, উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা আকবর আলী আহসান, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আজাদ মোঃ ইয়াকুব আলী, সিবিএমসি’র প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উপদেষ্টা ডাঃ ফজিলাতুন্নেসা হালিমা, বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ-তারাকান্দার সহকারি অধ্যাপক (গণিত) শফিকুল আলম, আনন্দ মোহন কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক উপদেষ্টা তারিক সালাহ উদ্দিন মামুন, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মাহফুজুর রহমান, পয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ জোয়ারদার, কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ মকবুল হোসেন, অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল হুদা সজীব, উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিজান, কো-অর্ডিনেটর আমিনুল ইসলাম রাজন, হেলডস্ -এর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল সায়েম লিঠু, সহ-সভাপতি সাংবাদিক আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তাসফিক হক নাফিউ, মোঃ মোস্তফা কামাল, মন্নাছ মীর প্রমুখ।
এসোসিয়েশনের সভাপতি আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আল মাকসুদুল হাসান এবং সদস্য সাজ্জাদ হোসাইনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিককে শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ গণপতি আদিত্যকে চিকিৎসায় ও হেল্ডস, ফুলপুরকে সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এরপর অনার্স ফাইনাল ২০১৭ –এ সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কৃতি শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন, কণিকা আক্তার ও তাসরিন জাহান রিমু, গণিত বিভাগের কৃতি শিক্ষার্থী আল মাকসুদুল হাসান, ইসলামী শিক্ষা বিভাগের ফরিদ আহম্মেদ, সমাজকর্ম বিভাগের মাহফুজা আক্তার রুবি, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শায়লা শারমীন মৌসুমী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের আতাউর রহমান ফুয়াদ, দর্শন বিভাগের আইরিন আক্তার ও ফাদিল আল মেহেদী এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের আরাফাত হাসান আকাশকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
সবশেষে ফুলপুরের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ২০১৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সৌভাগ্য অর্জনকারী কৃতি শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নওরিন সাদিয়া ঐতি ও সাইফুর রহমান ফাহাদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রজিতা জোয়ারদার ও
তাসনুভা, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আরিফুজ্জামান আরিফ ও শ্রাবণী রায় নিপা এবং বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সৌভাগ্য অর্জনকারী মাহবুবা তাসনিম মুনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ফুলপুরের কৃতি শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তোমরাই ফুলপুরের প্রাণ। তোমরাই ফুলপুরের জন্য বিরল সম্মান বয়ে আনবে। মেডিকেল কলেজে সদ্য চান্স প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেওয়ার সময় তাদের পিছনে মা-বাবা ও শিক্ষকদের অবদান বিষয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, আমরা আমাদের মা-বাবা ও শিক্ষকদের কখনও ভুলব না। আমাদেরকে ঘিরে তাদের যে প্রত্যাশা রয়েছে তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাব। বক্তব্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক, ফুলপুর পাইলট স্কুল থেকে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। ফুলপুরের প্রতি একটা দুর্বলতা আমার মাঝে সব সময়ই কাজ করে। তিনি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান। ধন্যবাদ জানান ফুলপুর অনার্স স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে । প্রধান উপদেষ্টাও বৈরি আবহাওয়ার মাঝে কষ্ট করে অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরে সভাপতির সমাপনী বক্তব্য ও সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।