এম এ মান্নান
ময়মনসিংহের ফুলপুরে সাপ্তাহিক প্যারেড শেষে গ্রাম পুলিশরা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে নাম্বার ওয়ান দাবি হলো, চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি কর্মচারির মর্যাদা চান তারা। রবিবার হাজিরা নেয়ার পর ফুলপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জ একেএম মাহবুব আলম তাদের অভিব্যক্তি জানতে চাইলে তারা সরকারের কাছে ওই দাবি তুলে ধরেন। তারা জানান, গ্রামীণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রাসহ ২৪ ঘন্টাই সমাজ উন্নয়নে তারা নানাবিধ ভূমিকা রেখে আসছেন। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রেখে চললেও তাদের ভাগ্যের তেমন কোন উন্নয়ন ঘটেনি। যখনই ইউনিয়নের কোথাও কোন সমস্যা দেখা দেয়, তখনই তারা সেখানে ছুটে যান। গ্রাম পুলিশ আব্দুল করিম জানান, ইউপি সচিবকে জন্ম-মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করে প্রদান করা, ইউপি ভবন ও বিভিন্ন সড়কে রাত্রিকালীন ডিউটি, গ্রাম-আদালত, গ্রামে কোন সংস্থার কর্মসূচি চলাকালীন ও সড়ক দুর্ঘটনার স্থানে তাৎণিক দায়িত্ব পালন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাল্যবিয়ে আয়োজনের তথ্য প্রদান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে কোন অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর সংবাদ জানানো, মাদকদ্রব্য ও জুয়া প্রতিরোধে অভিযান চালনা, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন সময়ে সড়ক পাহারা দেওয়া, নির্বাচনকালীন, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় দায়িত্ব পালন এবং মানুষদের মধ্যে সংঘর্ষ রোধে ভূমিকা রাখাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে গ্রাম পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কাজ হিসেবে পর্যাপ্ত বেতন ভাতা বা কোন সুযোগ-সুবিধা আমরা পাচ্ছি না। স্বল্প বেতনে আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বহু কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
মহিলা গ্রাম পুলিশ মায়া রাণী বলেন, সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের তথ্য সংগ্রহ করে প্রদান করাসহ গ্রামে গ্রামে আইনশৃঙ্খলা রায় অবদান রাখলেও আমাদের দেখার যেন কেউ নেই। আমরা যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। বর্তমানে এই আড়াই হাজার টাকায় কিচ্ছু হয় না।
গ্রাম পুলিশ আব্দুস সালাম জানান, কোথায় কখন কি ঘটে এটা ভেবে আমরা বাড়িতে ফিরেও শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। কোথাও কোন সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গেই ছুটতে হয়। বলা চলে, ২৪ ঘন্টাই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতো সেবা দেওয়ার পরও আমাদের বেতন অতি সামান্য। তাই আমাদের পরিবার-পরিজন ও জীবন মানের বিষয়টি সরকারকে বিবেচনায় নিয়ে আমাদেরকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারির ন্যায় সরকারি মর্যাদা ও সমস্কেল প্রদানসহ রেশন ব্যবস্থা চালু ও চাকরিকালীন মারা গেলে পরিবারকে একাকালীন কিছু ভাতা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
চতুর্থ শ্রেণীর মর্যাদা চায় গ্রাম পুলিশরা
