এম এ মান্নান
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলীর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা রাখার (ফাস্টিং) ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন উপকার বয়ে আনে। ক্যান্সারের ঝুকি কমে যাওয়া, বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটিকে মন্থর করে দেওয়া এবং জীবনচক্রটিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বাড়িয়ে দেওয়া।
অর্গানিজমের জীবনচক্রটিকে (লাইফ স্পান) বাড়িয়ে দেওয়ার একমাত্র প্রমাণিত পদ্ধতি হলে কম ক্যালরী গ্রহণ করা। এছাড়াও ক্যালরী রেসট্রিকসন ডায়েটের মত রোজাও ক্যালরী গ্রহণকে কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এজিং এর নিউরোসাইন্সের যে ল্যাবরেটরি রয়েছে তার প্রধান প্যাটারসনের অভিমত। ন্যাশনাল একাডেমি অব সাইন্সের মতে রোজা (ফাস্টিং) রাখার মধ্যে অন্যান্য উপকার হল, স্ট্রেস রেজিস্ট্যান্স বা স্ট্রেস কমিয়ে দেয়া, ইনস্যুলিন সেনসিটিভি বাড়িয়ে দেওয়া, মরবিডিটি ( morbidity) কমিয়ে দেওয়া এবং আবার জীবনচক্র বা লাইফস্প্যান বাড়িয়ে দেওয়া। একজন সুস্থ্য মানুষ রোজা রাখলে তা স্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনে। এটি একটি কার্যকরী ডিটোক্সিফিকেশন থেরাপি। যার ফলে শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থগুলি ভেঙ্গে পরে ও শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। যাদের শরীরের ওজন বেশি এবং যাদের কম, উভয়ের জন্যই রোজার উপযোগিতা রয়েছে। এটা সহজেই অনুমেয় যে রোজা শরীরের ওজন কমায়। রোজার সময়টুকুতে শরীরে জমে থাকা চর্বিগুলো ব্যবহৃত হয়, পুড়ে নি:শেষিত হয় এবং এইভাবে শরীরের ওজন কমে যায়। যাদের শরীরের ওজন কম রোজা রাখার ফলে তাদের হজমের প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক হয়ে আসে। রোজা রাখার ফলে তারা যে খাদ্য খায় তা হজম করতে ও তার থেকে পুষ্টিকে গ্রহণ করার জন্য শরীর তৈরি হয়ে উঠে। রোজা অনেক ধরনের চর্ম রোগের সমস্যা থেকে আমাদের মুক্তি দেয়। এটি হয়ে থাকে শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্যগুলো বেরিয়ে যাওয়ার ফলে এবং রক্ত পরিশুদ্ধ হওয়ার ফলে। রোজা সিগারেট এবং মদের মত অনেক ধরনের আসক্তি থেকেও আমাদের মুক্তি দিতে পারে। পুরোপুরি অভুক্ত থাকার প্রধান সমস্যার দুটি হল হাইপোকালেমিয়া এবং কার্ডিয়াক এরিথমিয়া। প্রথমটিতে রক্তে পটাসিয়ামের লেভেল অনেকটা নীচে নেমে যায় আর দ্বিতীয়টিতে হার্টবিট অস্বাভাবিক হয়ে পরে। কিন্তু রোজা টোটাল ফাস্টিং নয়, রোজাদাররা নিয়ম করে ইফতার এবং সেহেরীর সময় খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন। এতে রক্তে সুগারের যে ঘাটতি দেখা দেয় তাও পুরণ হয়ে যায়।
অতএব, এটাতে কোন মতভেদ নেই যে, রোজা একজন সুস্থ্য মানুষের স্বাস্থ্যের আরো উন্নতি ঘটায়। কিন্তু যারা অসুখ বিসুখে ভোগছেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখা উচিত। — সংগৃহীত।
মাহে রমজানের উপকারিতা — বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ
